Social Media and Their Tricks | সোশ্যাল মিডিয়া এবং তাদের চাল



Mehedi Hasan Pranta

31 August, 2021

অনেক সময় ই
হয়তো আমাদের সাথে এমন হয় যে আমরা ভাবছি আর একটু পরেই বের হয়ে যাবো ফেসবুক / ইন্সট্রাগ্রাম / ইউটিউব থেকে কিন্তু বের হতে পারি না। চাইলেও পারি না কেমন যেন একটা বিভ্রম এর মধ্যে পরে যাই । অথবা এরকম দেখা যায় যে ছেলেটা আগে সোশ্যাল মিডিয়া একদম ই পছন্দ করতো না সেও এখন এগুলার এডিকশন এ পরে গেছে। এর কারণ হলো বিগ ডেটা। চতুর্থ শিল্প বিল্পবের যুগে অনেক চাহিদাসম্পন্ন একটা বিষয় হলো বিগ ডেটা। বড় বড় যেসব টেক কোম্পানীগুলো আছে তারা বেশীর ভাগ ই আমাদের তথ্যকে সংগ্রহ করে রাখে। আমাদের উপরে গবেষণা করার জন্য, বিভিন্ন রকমের এক্সপেরিমেন্ট চালানোর জন্য। বিদেশী যেসব বড় বড় কোম্পানী গুলো আছে তাদের ব্যাবসার একটা নীতি হলো, আপনি যদি প্রোডাক্ট এর জন্য কোন টাকা না দেন তাহলে আপনি ই প্রোডাক্ট। তাই যেহেতু আমরা এসব সোশ্যাল মিডিয়াগুলো ফ্রি তেই ব্যাবহার করি তাই তারা খুব কৌশলে সুক্ষভাবে আমাদেরকেই প্রোডাক্ট বানিয়ে ব্যাবহার করছে। অনেক সময়ই দেখবেন এমন হয় ফেসবুক /ইউটিউব অথবা অন্য কোন সোশ্যাল মিডিয়া সাইটে এমন সব কন্টেন্ট আমাদেরকে স্পনসর বা সাজেস্ট করা হয় যেগুলো একদম আমাদের চয়েজ এর সাথে মিলে যায়। এখন কথা হলো তারা এই চয়েজগুলা ম্যাজিকালি জেনে যায় কীভাবে.? অনেক সময় আমরা অবাক হতে পারি। তখন আমাদের মনে হতে পারে এটা একটা কো ইন্সিডেন্ট। কিন্তু মোটেও এটা কোনো কাকতালীয় বিষয় না। এগুলা সবই তাদের মেশিন লার্নিং এলগরিদম এ পূর্ব পরিকল্পিত। খুজে দেখেন কোথাও না কোথাও আপনি খুজেছিলেন অথবা সেই সম্পর্কিত কথা বলেছিলেন৷ এখন হতে পারে সেটা অনেক আগেও। তারা মুলত সম্ভাবনার উপরে ভিত্তি করে এই সাজেসন্স গুলো দেয়। যেমন ধরুন, এর আগে ফেসবুক এর অন্য ইউজাররা যারা বেশীর ভাগ ই গুগলে কিছু একটা কেনার জন্য সার্চ করেছিলো আর পরবর্তীতে দেখা গেছে তাদেরকে যখন ফেসবুকে কোন অনলাইন শপে সেই জিনিসটা কেনার জন্য সাজেস্ট করা হয়েছে তখন বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই তারা কিনেছে। এরকম আগের বিভিন্ন গবেষণার উপরে ভিত্তি করে তারা আমাদের কে এই সাজেসন্স গুলো দেয়। আর এতে তারা অনেকটা হয় তো সফল ও হয়। আর তারা যেহেতু খুব উন্নত দেশেরই সেজন্য তাদের থাকে অনেক অনেক ডেটাসেট, অনেক অনেক সচেতন নাগরিক। তাই তারা খুব সহজে ডেটা কালেকশন ও করতে পারে আর আমাদের মানসিকতার উপর গবেষণা করে আমাদের মাইন্ড কে অনেকটাই রিড করে ফেলতে পারে ৷ তারা কীভাবে আমাদের মাইন্ড রিড করে একটা উদাহরণ দেই। ধরুন আপনার এলাকার একজন বুড়া চাচা সে বাংলা ছবির ক্লিপ দেখতে পছন্দ করে। একটু পরেই দেখবেন তার বয়সী একজন কে ফেসবুক ওই টাইপের ই একটা বাংলা মুভির ক্লিপ সাজেষ্ট করে দিছে। কীভাবে বুঝলো.? প্রথমত তারা আমাদের প্রতিটা স্টেপ ট্র‍্যাক রাখে। কখন কোন আর কী টাইপের ভিডিও আমরা দেখতেছি সব। আর তাছাড়া ওই যে বুড়া চাচার ফোনে লোকেশন এক্সেস তো নেয়া আছেই। তখন দেখা গেল যে, তারা গবেষণা করে দেখেছে এই এলাকাটায় এই বয়সের লোক যারা আছে তারা বেশীর ভাগ ই এই টাইমে এই টাইপের কন্টেন্ট ই বেশী দেখে। আর একদম সিউর হওয়ার জন্য তারা একটা নয় অর্থাৎ শুধু লোকেশন ই নয় বরং অনেকগুলো ফ্যাক্টর ইউজ করে। এমন কি তারা আমাদের ভয়েস ও রেকর্ড করে সবসময়। অনেকে এখন বলতে পারে তাদের তো আর খেয়ে দেয়ে কাজ নাই আমাদের এগুলা এতগুলা কথাবার্তা রেকর্ড করবে। হ্যা তারা নিজেরা অবশ্যই এগুলা সারাদিন বসে বসে শুনে না। তারা এগুলা প্রোগ্রাম বানিয়ে সেই প্রোগ্রাম কে দিয়ে শুনায়। সেগুলা থেকে বাছাই করে করে গুরুত্বপূর্ণ কথা গুলাকে বের করে৷এগুলা করার জন্যই এখন পাইথন প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ এত জন্যপ্রিয়, কারণ এতে অনেক বিল্ট ইন ফাংশন আর লাইব্রেরী থাকে। যেমন আপনি কলে বা ভয়েস রেকর্ডে কোন ভাল ব্রান্ডের নাম বললে দেখবেন সেই ব্রান্ড এর কোন পেইজ বা ওয়েবসাইট আপনাকে সাজেস্ট করা হয়েছে । গুগল আমাদের এত এত সুবিধা দেয়। কেন দেয়.? তাদের লাভটা কি.? এমনিই এমনিই দেয়.? আমাদেরকে ড্রাইভে ১৬ জিবি স্টোরেজ দেয় সেই স্টোরেজ টা শুধুমাত্র আমাদের চয়েজ এর উপর গবেষণা করার জন্য দেয়।ওই যে বলেছি আগেই ওদের ব্যাবসার নীতি। প্রোডাক্ট এর জন্য টাকা না দিলে আপনি নিজেই প্রোডাকট। লোকেশন সার্ভিস টা যেমনি অনেক উপকারে আসে ঠিক তেমনিই বাশ ও দেয়। কখন কোন জায়গায় কি করতেসি সব ট্র‍্যাক থাকে। যেমন বিকাশ ইউজ করতে গেলে লোকেশন এলাও দিতে হবেই। তখন আপনি কোথায় কি কিনছেন সেটার একটা হিস্ট্রি ওদের কাছে রয়ে গেল।ফেসবুকে কোথাও গেলেই চেক ইন দিয়ে দেই। কারণ ওই যে সবাই দেয় এটা ট্রেন্ড। কিন্তু এভাবেই ওদের কাছে তথ্য থাকে কোন জায়গাটা কোন এলাকায় বেশী জনপ্রিয় অথবা গেদারিং বেশী হয় । গুগল এইসব ট্রিকস এর জন্য আর ডেটা নিয়ে শঙ্কা থাকার জন্যই হুয়াওয়ের সাথে চুক্তি ভঙ্গ হয়ে যায়। আর তারপরই এন্ড্রয়েডের পরিবর্তে হুয়াওয়ে নিয়ে আসে নতুন হারমনি অপারেটিং সিস্টেম । আর এটা আমি ৯০% সিউর বড় বড় সোশ্যাল মিডিয়ার এপস গুলো নিজেরা ইউজারদের ডেটা নিজেদের মধ্যে গবেষণা করার জন্য শেয়ার করে নেয়। কারণ বেশীর ভাগ সময় ই আপনি দেখবেন যে, ইউটিউবে এ কিছু একটা সার্চ দিয়েছিলেন একটু পরে ফেসবুকে আপনাকে সেটা সাজেষ্ট করছে। আর একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আমরা যখন এসব সোশ্যাল মিডিয়ার এপস গুলো ডাউনলোড করি তখন বেশীর ভাগ এপস গুলোই আমাদের ফোনের লোকেশন, গ্যালারী আর ফাইলের এক্সেস চায়। আর এগুলোর কারণ হিসেবে তারা দেখায় যে এই এক্সেস না পেলে আমরা ইউজ করতে পারবো না গুরুত্বপূর্ণ ফিচারগুলো। ইদানীং নতুন নতুন আপডেট ফোন গুলোতে শুধুমাত্র এপ ব্যাবহারের টাইমেই এগুলোর এক্সেস নিতে পারবে এমন ফিচার দিয়ে দেয়। এই সমস্যা থেকে বাচাটা খুব কঠিন হয়ে দাড়িয়েছে কারণ এগুলা এখন আমাদের প্রতিদিন এর যোগাযোগের কাজের সাথে মিশে গেছে। পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষতিকর বিষটা খুব মিষ্টি বিষ। তদ্রুপ এটাও খুবই সূক্ষ্ম একটা ধোকা। যেহেতু এখন এগুলা বাদ দেয়া ও কঠিন হয়ে গেছে। তাই আমরা যেটা করতে পারি এইসব এপস গুলাকে শুধু মাত্র কল করার সময়, ছবি তোলার সময় ভয়েস আর ক্যামেরার এক্সেস এলাও করতে পারি। যদিও কাজ টা একটু ঝামেলার হবে। আর আপনার মোবাইলের সেটিংস থেকে এপস এ গেলে আপনি নিজেই পারমিশন এ গেলে দেখতে পারবেন যেমন অনেক এপস এমন কিছু পারমিশন নিয়ে রাখছে যেগুলা আপনে ভাবেন ও নাই। সবচেয়ে ভাল হয় সেগুলা অফ করে দিলে। আর খুব বেশী যেটা দরকার পরে সেটা allow only while using app দিলেই ভাল হয়। ইনশাল্লাহ আস্তে আস্তে একটা সময় তাদের এই ট্রিকস আমরা সবাই বুঝতে পারবো।